অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ লাখ দক্ষ শ্রমিক নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে সৌদি আরব। এমনটাই জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মাদ মেজবাহ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার সকালে শের-ই-বাংলা নগরস্থ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানোর ব্যাপারে আমাদের আলোচনা হয়েছে। শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকার বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কারণে সৌদি সরকার শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আশা করি বছরে চার থেকে পাঁচ লাখ দক্ষ শ্রমিক নেবে সৌদি আরব। এছাড়া বাংলাদেশি চিকিৎসক ও গ্রাজুয়েট নার্স নিতে বেশ আগ্রহী দেশটি।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক পাঠানোর ব্যাপারে আমাদের ব্র্যান্ডিংয়ের উপর জোর দিতে হবে। ব্র্যান্ডিংয়ের উপরই নির্ভর করছে আমাদের শ্রমিক পাঠানোর ভবিষ্যৎ।’
ওমরা হজ সম্পর্কে সৌদি সরকারের মনোভাব তুলে ধরে সচিব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওমরা হজ পালনে ভিসা বন্ধ আছে। আমরা বিষয়টি সৌদি প্রতিনিধির কাছে তুলে ধরেছি। এখরো এ বিষয়ে তারা আমাদের কিছু জানায়নি। আশা করি, শিগগিরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সৌদি সরকার।’
তিনি বলেন, ‘সৌদি সরকার ১০৪টি এজেন্সির বিষয়ে আমাদের অভিযোগ করেছিল। এর মধ্যে ৬৯ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করেছি। ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে আর্থিকভাবে জরিমানা করেছি। ৯টি এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের এ পদক্ষেপ দেখে সৌদি সরকার খুশি হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে ওমরা হজের ভিসা সংক্রান্ত ঝামেলা কেটে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছি।’
বৈঠকে সৌদি আরবকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সুবিধা দেয়া প্রস্তাব করা হয়েছে। সেখানে বিনিয়োগের আহ্বান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মোহাম্মাদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সৌদি আরব থেকে বেশি আমদানি করি। সে তুলনায় রপ্তানি কম। এই বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর আশ্বাস দিয়েছে সৌদি আরব।’
এছাড়াও ব্যবসায়-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, বিমান চলাচল, ধর্ম, শিক্ষা, অদক্ষ শ্রমিক নিযোগ, স্বাস্থ্য, কৃষি, সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন খাতে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি; বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি ও সৌদি আরব থেকে সার আমদানি বিষয়গুলো আলোচনায় হয়েছে বলে জানান মেজবাহ উদ্দিন।
এ সময় সৌদি আরবের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক সমঝোতা চক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সৌদি সরকারের পক্ষে শ্রম উপমন্ত্রী ড. আহমেদ বিন ফাহাদ ও বাংলাদেশের পক্ষে ইআরডির সচিব মোহাম্মাদ মেজবাহ উদ্দিন।